রংপুরে প্রতীক পেয়ে অনুভূতি জানালেন প্রার্থীরা
রংপুরের ৬টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ
স্টাফ রিপোর্টার ♦ রংপুরের ৬টি আসনের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে শুরু হলো নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। প্রতীক নিয়ে ভোট চাইতে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার পাড়া-মহল্লায় ছুটেছেন প্রার্থীরা। প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি অন্যদিকে ভোটাররা জানাচ্ছেন নিজেদের অভিযোগ-অনুযোগ। তবে ইউপি-উপজেলা-সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনে নেই আমেজ। যার কারণ হিসেবে ভোট বিশ্লেষকরা বিএনপি’র নির্বাচনে না আসার বিষয়টিকে বলছেন।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে প্রতীক নিতে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে আসেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান রংপুরের ৬টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা পেয়েছেন দলীয় প্রতীক। তবে বেশিরভাগ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বেছে নিয়েছেন ট্রাক ও ঈগল মার্কা। প্রতীক পেয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। বিশেষ করে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে সবচেয়ে বেশি উচ্ছাস লক্ষ্য করা গেছে।
রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও আংশিক সিটি কর্পোরেশন) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৯ জন প্রার্থী। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান বাবলু (কেটলি), জাতীয় পার্টির বহিস্কৃত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী মসিউর রহমান রাঙ্গা (ট্রাক), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশাররফ হোসেন (মোড়া), বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টির বখতিয়ার হোসেন (হাতুড়ী), তৃণমূল বিএনপি’র বদরুদ্দোজা চৌধুরী (সোনালী আঁশ), স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহিনুর আলম (ঈগল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি’র হাবিবুর রহমান (আম), বাংলাদেশ কংগ্রেসের শ্যামলী রায় (ডাব) প্রতীক পেয়েছেন।
রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের আবুল কালাম মোঃ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আনিছুল ইসলাম মন্ডল (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ সরকার বিটু (ট্রাক) প্রতীক পেয়েছেন।
রংপুর-৩ (সদর ও সিটি কর্পোরেশন) আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের (লাঙ্গল), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু (একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক (ডাব), জাসদের সহিদুল ইসলাম (মশাল), স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী (ঈগল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল ইসলাম (আম) প্রতীক পেয়েছেন।
রংপুর-৪ (কাউনিয়া-পীরগাছা) আসনে ৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের টিপু মুনশি ( নৌকা), জাতীয় পার্টির মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের সিরাজুল ইসলাম (ডাব) প্রতীক পেয়েছেন।
রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের রাশেক রহমান ( নৌকা), জাতীয় পার্টির আনিছুর রহমান (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার (ট্রাক), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া (একতারা), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আব্দুল হালিম মন্ডল (গামছা), ইসলামিক ফ্রটের এনামুল হক (চেয়ার) ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মাহবুবুর রহমান (ডাব), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফের আব্দুল বাতেন (টেলিভিশন) প্রতীক পেয়েছেন।
রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির নুর আলম মিয়া (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কল্যান পার্টির জাকারিয়া হোসেন (হাতঘড়ি), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির হুমায়ুন ইজাজ (আম), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম (ট্রাক), স্বতন্ত্র প্রার্থী তাকিয়া জাহান চৌধুরী (কাঁচি) ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মাহবুল আলম (ডাব) প্রতীক পেয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, রংপুরের ৬টি সংসদীয় আসনে ৩৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়েছে। প্রার্থীরা যেন বিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা করেন এ বিষয়ে তাদের দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা এড়াতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। আশা করছি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।