ঘরবাড়ি-সড়কের পর এবার তিস্তা ছুটছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রাসে
বিদ্যালয়টি নদীর তলদেশ থেকে ৫০ ফুট দূরে
স্টাফ রিপোর্টার ♦ পানিতে কানা কানায় ভর্তি এখন তিস্তা। গত কয়েকদিন ধরে উজান থেকে বয়ে যাওয়ায় তিস্তার পানি সীমান্তের ওপরে উঠছে। ফলে নদী ভাঙ্গন বাড়ছে। ঘরবাড়ি, গাছপালা ও সড়কের পর এবার তিস্তা ছুটছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রাস করতে। সোমবার (১৭ জুলাই) সকালে তিস্তা বেষ্টিত রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নে ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত একটি গ্রামের চিত্র দেখা গেছে।
দেখা গেছে, লক্ষ্মীটারী শংকরদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীর তলদেশ থেকে ৫০ ফুট দূরে। যেকোনো মুহূর্তে ক্ষুধার্ত তিস্তা গ্রাস করতে পারে স্কুলটি। ফলে স্কুলের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে অস্থায়ী জায়গায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন শিক্ষকরা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালে গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের তিস্তার চর শংকরদহে শংকরদহ প্রাথমিক সরকারি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০৪ সালে ভাঙনের কারণে বিদ্যালয়টি সরিয়ে বর্তমান স্থানে আধাপাকা ঘর তৈরি করা হয়।
শংকরদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রানা, আনিশা, মুসলিমাসহ অন্যরা জানায়, আমরা স্কুলে একসঙ্গে খেলাধুলা করতাম। এখন স্কুলটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ নেই, গরমে পড়াশুনা করা খুব কঠিন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল জলিল জানান, তিস্তা নদী ভাঙতে বিদ্যালয়ের কাছে আসে। তাই উপজেলা নির্বাহী স্যারের নির্দেশে শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল সরানোর কাজ শুরু করেছি। আর আমরা ৬ জন শিক্ষক অস্থায়ীভাবে অন্যত্র বাড়ি তৈরি করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া ভাঙনের কারণে অনেক পরিবার বাস্তুচ্যুত হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাগমা শিলভিয়া খান জানান, নদী ভাঙনের কারণে শংকরদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিন ও বোর্ডসহ মালামাল নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দা, ইউএনও সুধীজন ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরে আবার ভবন নির্মাণের জন্য নিরাপদ স্থান দেখে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করব।