একাধিক প্রেম নিয়ে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে প্রাণ যায় সানজিদার
কথিত প্রেমিক সায়েম হত্যার দায় স্বীকার করেছে
স্টাফ রিপোর্টার ♦ উচ্ছৃঙ্খল জীবন ও একাধিক প্রেমের কারণে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে রংপুরের স্কুল ছাত্রী সানজিদা খানম ইভাকে (১৬)। এ কিলিং মিশনে অংশ নেয় সানজিদার কথিত প্রেমিকসহ ৩ জন। উপর্যুপরি ছুরির আঘাতে মারা যায় সানজিদা। বৃহস্পতিবার আদালতে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় সানজিদার কথিত প্রেমিক নাহিদুল ইসলাম ওরফে সায়েম (১৯)।
পুলিশ জানায়, ৩ বছর আগে সায়েমের সাথে পরিচয় হয় সানজিদার। তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরই মাঝে সানজিদার একাধিক ছেলের সাথে সম্পর্কের বিষয়টি সায়েম জানতে পেরে তাদের মাঝে প্রায় সময় বাকবিতন্ড হয়। এনিয়ে সানজিদার উপর চাপা ক্ষোভ বিরাজ করে সায়েমের। চলতি বছরের ১৬ আগস্ট বেলা আড়াইটায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সানজিদাকে নগরীর শাপলা সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে নিয়ে আসে সায়েম। সেখানে সানজিদার নতুন প্রেম নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্ক বেঁধে যায়। পরে সায়েম তার পূর্ব পরিচিত আরও ২ জনের সাহায্যে কৌশলে সানজিদাকে মাহিগঞ্জে রেখে আসে। এর কিছুক্ষন পর সায়েম সানজিদাকে মাহিগঞ্জ থেকে পীরগাছা আলী বাবা থিমপার্কে ঘুরতে নিয়ে যায়। রাত হয়ে যাওয়ায় সানজিদা পার্ক থেকে বাড়ি ফিরে আসার জন্য সায়েমকে বারবার চাপ দিতে থাকে। এরপর তারা পার্ক থেকে মধুপুর রোডের একটি ফাঁকা জায়গায় আসলে সানজিদাকে একাধিক প্রেম নিয়ে জেরা করা হয়। এ সময় তাদের মাঝে বাকবিতন্ড শুরু হলে সায়েমসহ তার অন্য ২ সহযোগি মিলে ছুরি দিয়ে সানজিদাকে হত্যা করে। এরপর সানজিদার লাশ মধুপুর রোডের পাশে ফেলে তারা সটকে পড়ে।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম পলাশ বলেন, আমরা সানজিদার ব্যাগে পাওয়া একটি খাতা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সায়েমকে আটক করি। আদালতে কথিত প্রেমিক সায়েম হত্যার দায় স্বীকার করেছে। উচ্ছৃঙ্খল জীবন ও একাধিক প্রেমের কারণে তারা সানজিদাকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। সায়েম নগরীর ক্যান্টপাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে। সে মাহিগঞ্জের তালুক উপাশু গ্রামের নুর হোসেন মিলিটারীর ছেলে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে কাউনিয়া উপজেলার কুটিরপাড় বাজার থেকে মধুপুর সড়কের পাশে সানজিদার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সানজিদার বাবা ইব্রাহিম খান বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সানজিদা বড়দরগা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।