রংপুরে পশুরহাট বন্ধ, সাড়া নেই অনলাইনেও

স্টাফ রিপোর্টার ♦ ঈদুল আযহার বাকি আর ১৩ দিন। ঈদ ঘনিয়ে এলেও রংপুরের পশুর হাটগুলো ফাঁকা। করোনার বিস্তার রোধে কঠোর বিধিনিষেধে জেলার ৩৫টি হাট বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। তবে বন্ধ হয়নি গরু-ছাগলের বেচা-কেনা। কোরবানীর পশু কেনা-বেচায় অনলাইনে পশুরহাট চালু করেছেন প্রাণি সম্পদ বিভাগ। এতে তেমন সাড়া মিলছে না বলে দাবি অনলাইন নির্ভর খামারিদের।
এদিকে চলমান বিধিনিষেধ ও হাট বন্ধের প্রভাবে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক সংকট। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু হাটে গরু-ছাগল তোলা হলেও ক্রেতাদের সাড়া মিলছে না। বিশেষ করে গরু কেনায় আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। হাটে সাধারণ ক্রেতাদেরও নেই ভিড়। এমন পরিস্থিতিতে খামারী ও ব্যবসায়ীরা আছেন বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কায়।
জানা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে ষ্টাইন ফ্রিজিয়ান, ব্রাহমা, শাহীওয়াল, ফ্রিজিয়ান, জার্সি ও শংকরসহ দেশীয় জাতের গরু পালন করেছে রংপুরের খামারীরা। কিন্তু, কঠোর বিধিনিষেধে গরু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
হাট না বসলে লোকসানের আশংকা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এদিকে এবারও চাহিদার তুলনায় রংপুর জেলায় দেড় লাখেরও বেশি পশু রয়েছে।
এদিকে পশুরহাট বন্ধ থাকলেও রংপুর মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে নানামুখী তৎপরতাও শুরু হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, ব্যাপারী ও দালালরা বাড়ি বাড়ি ও খামারে গিয়ে পশুর খোঁজখবর নিচ্ছেন। কেউ কেউ কম দামে কিনে বেশি লাভের আশায় ছুটে বেড়াচ্ছেন।
জানা গেছে, রংপুর জেলার সব থেকে বড় গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ লাখ টাকা। চার বছর ধরে ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুটি লালন পালন করছেন গঙ্গাচড়া উপজেলার তালুক হাবু এলাকার খামারি রওশন। পরম আদরের এ গরুর নাম রেখেছেন ‘ভদ্র’।
রংপুর নগরের লালবাগ হাটের ইজারাদার আব্দুল্লাহ হিল কাফি জানান, প্রায় আড়াই কোটি টাকায় হাটের ডাক নেয়া হয়েছে। এই হাটের সবচেয়ে বড় আয়ের উৎস কোরবানির পশু বেচাকেনা। এসময় হাট বন্ধ থাকলে তারা লোকসানের মুখে পড়বেন।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, করোনার কারণে গত বছরের মতো এবারও অনলাইনে পশু বেচাকেনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য খোলা হয়েছে ‘অনলাইন কোরবানীর পশুরহাট’ নামের একটি ফেসবুক আইডি।
জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ রোধে আপাতত কোরবানীর পশুর হাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তের আলোকে জেলার সবকটি পশুর হাট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, করোনা ঝুঁকি এড়াতে অনেক সচেতন মানুষ এখন অনলাইনের মাধ্যমে পশু কিনতে আগ্রহী। প্রাণিসম্পদ বিভাগ ফেসবুকে ই-মার্কেটিং পেজ খুলেছে। গতবছর অনলাইনেও কেনাবেচা হয়েছে। কোরবানীর পশুরহাট নামে খোলা ওই পেজটি খামারি ও ব্যবসায়ীরা অনুসরণ করতে পারবেন।