বাংলাদেশের জনগণের কোনও অধিকার নেই: জিএম কাদের (ভিডিও)
দেশের মানুষকে এগুলো থেকে মুক্ত করতে হবে
নভেল চৌধুরী ♦ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, বর্তমানে দেশের মানুষের ভোটাধিকার নেই। স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার নেই। গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাধীনতা নেই। মানুষের ভাত কাপড়ের অধিকার নেই। বলতে গেলে কোন কিছুৃরই অধিকার নেই। সংবিধান অনুযায়ী মানুষের যে মৌলিক অধিকার সেগুলো সরকার নিশ্চিত করতে পারছে না। দেশের মানুষকে এগুলো থেকে মুক্ত করতে হবে।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেলে রংপুর ও লালমনিরহাটে ৬ দিনের সফরে এসে রংপুর সার্কিট হাউজে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাজেটে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তারা এখন ডুবন্ত অর্থনীতিকে ভাসিয়ে রাখার মরিয়া চেষ্টা করছে। বাজেট ঘাটতি মোকাবেলায় জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে আইএমএফের কাছে উচ্চ সুদে ঋণ নিচ্ছে। ট্রেড ব্যালেন্স না থাকায় দেশে পণ্য আমদানী করা যাচ্ছে না। বিদ্যুতের অভাবে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, অনেক কারখানা সীমিত পরিসরে চলছে। এতে করে মানুষ বেকার হয়ে পড়ছে। অপরদিকে বাজেট ঘাটতি মোকাবেলায় গত ১০ মাসে ৭০ হাজার কোটি টাকা ছাপানো হয়েছে। এ বছর তা ১ লাখ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। ফলে মুদ্রাস্ফিতির কারণে দেশের মানুষে নাজেহাল অবস্থা। তাই এ বাজেট সাধারণ মানুষের দুরাবস্থা বাড়াচ্ছে। অর্থনৈতিক মন্দা বাড়াবে, অজানা, অনিশ্চিত বিপর্যয়ের দিকে দেশকে ধাবিত করছে।
জিএম কাদের বলেন, আমরা আশংঙ্কা করছি আগামীতে দেশের মানুষের হাতে কোন রাজনীতি থাকবে না। আগামী নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ সরকার এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচন করে ক্ষমতায় যায় তবে, দেশে একটি দল, তাদের একটি নেতা এবং এটি চিরস্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উপক্রম হতে পারে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে একটি ক্রান্তিকাল চলছে। অথচ চলতি বাজেটে প্রশাসনিক ব্যয় অনেক গুনে বৃদ্ধি করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নির্বাচনের কাজে নিয়োজিতদের খুশী করার জন্য সরকার এ কাজ করেছে। অথচ সরকারকে জনগণের স্বার্থ দেখা উচিত ছিল।
তিনি আরও বলেন, সার্বজনীন পেনশনের কথা সরকার এখন বলছে। অথচ বিগত সময়ে পাবর্ত্য চট্টগ্রামে রাবার বাগানের কাজ করা মানুষকে পেনশনের কথা বলে বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তারা কেউ পেনশন পায়নি। কর্তৃপক্ষ বলে ফান্ড নেই। তাই আমি সংসদে বলেছি সার্বজনীন পেনশনের টাকা ১০ বছর পর সাধারণ মানুষ পাবে কি। তারা কোন উত্তর দেয়নি। জনগণের পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের কোন কার্যক্রমে দেখছি না। সার্বিকভাবে বাজেট জনমূখী হয়নি।
জিএম কাদের বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা সকল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবো। এতে করে আমাদের সাংগঠনিক শক্তি অনুমান করা যাবে। অপরদিকে সরকার কিভাবে কারচুপির মধ্যে নির্বাচন করে নিজেদের প্রার্থীকে জিতিয়ে দিচ্ছে তা জনগণ দেখতে পাবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন মেয়র ও মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির আহমেদ, জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাকসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর তিনি নগরীর দর্শনা পল্লী নিবাসে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন।