আইইডি হামলায় শীর্ষ নেতাকে মুক্তির পরিকল্পনা ছিল জেএমবি’র
এহসানুল হক সুমন ♦ নীলফামারী সদর উপজেলার মাঝাপাড়া গ্রাম থেকে জেএমবি’র উত্তরাঞ্চলের সামরিক শাখার প্রধান আহিদুল ইসলাম ওরফে আহিদ ওরফে পলাশসহ তার ৪ সহযোগিকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে র্যাব। উত্তরাঞ্চলে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হওয়া শীর্ষ নেতাদের ছিনিয়ে আনতে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে জেএমবি।
আদালতপাড়া, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দপ্তরগুলোতে শক্তিশালী আইইডিসহ বিস্ফোরক হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল এ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের উল্লেখ করে শনিবার বিকেলে রংপুর নগরীর আলমনগরে র্যাব-১৩ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের জানান, উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ছদ্মবেশে সহজে নানা পেশায় জড়িত হওয়া যায়। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইপিজেডসহ নানা প্রতিষ্ঠানে জেএমবি’র সদস্যরা ঢুকে পড়ে এবং সদস্য সংগ্রহ করে। এরপর তাদের জঙ্গী কার্যক্রমের নানা প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এভাবেই বাড়াতে থাকে তাদের সদস্য সংখ্যা। সেই সাথে অর্থ সংগ্রহসহ অনলাইনের মাধ্যমে বিস্ফোরক তৈরীসহ নানা প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছিলো।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত মাঝাপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে একটি বাড়ি থেকে উত্তরাঞ্চলের সামরিক শাখার প্রধান নীলফামারী জেলার উত্তর মুশরত কুখাপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আহিদুল ইসলাম ওরফে আহিদ ওরফে পলাশসহ (২৬) অন্য ৪ সহযোগিকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলো, পশ্চিম কুচিয়ামোড় পাঠানপাড়া গ্রামের ওয়াজ্জুউদ্দিন মাসুদের ছেলে ওয়াহেদ আলী ওরফে আব্দুর রহমান (৩০), দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের তছলিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে ডাঃ সুজা (২৬), উত্তর মুশরত কুখাপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদ ওরফে জোবায়ের (২৭) এবং সোনারাই কাচারীপাড়া গ্রামের রজব আলীর ছেলে নুর আমিন ওরফে সবুজ (২৮)।
এর মধ্যে আহিদুল দশম শ্রেনী পাস ও খেলনা প্রস্তুতকারক একটি কোম্পানী চাকুরী করেন। সে ২০১৫ সালে জেএমবি’র রংপুর আঞ্চলিক নেতার কাছ থেকে বায়াত গ্রহণ করেন এবং সামরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। গ্রেফতার হওয়া ডাঃ সুজা গ্রাম্য ডাক্তার, জোবায়ের একটি খেলনা প্রস্তুতকারী কোম্পানীর সুপারভাইজার, ওয়াহেদ আলী একটি কোম্পানীর শ্রমিক এবং নূর আমিন বেসরকারী চাকুরীজীবি। র্যাব অভিযানে বোমা তৈরীতে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্য, একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, ৫ রাউন্ড গুলি ও বিস্ফোরক তৈরীর অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রংপুর র্যাব-১৩ এর কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেরদৌসসহ র্যাবের অন্যান্য সদস্যরা।