রংপুর কারাগারের সাবেক কর্মকর্তাকে আটকিয়ে প্রতারণা, ভূয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতার
এহসানুল হক সুমন ♦ বিমান ভ্রমণে পরিচয় হয় আনজু মিয়া (৫১) ও তাসনিম সরকার ওরফে অনামিকার (২৮)। রংপুরের সাবেক জেল কর্মকর্তা আনজুকে অনামিকা পরিচয় দেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে। এরপর আদান-প্রদান হয় ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে। সেই সূত্রে ধরে মাঝে মধ্যে কথোপকথন হয় আনজু ও অনামিকার।
২ আগস্ট বিকেলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আনজুকে রংপুর জিলা স্কুল মোড়ে ডাকেন অনামিকা। নোহা গাড়িতে করে ২-৩ জন ব্যক্তিকে নিয়ে প্রস্তুত থাকেন তিনি। কুশল বিনিময়ের আগেই আনজুকে ঘিরে ফেলে তারা। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় পার্শ্ববর্তী সুস্থ জীবন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। অনামিকা আনজুকে ভাই পরিচয় দিয়ে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে বন্দি করেন। এরপর আনজুর দেহ তল্লাশী করে ৪৪ হাজার ২৫০ টাকা এবং হাতঘড়ি, স্বর্ণের আংটি, ড্রাইভিং লাইসেন্স খুলে নেয়া হয়। আনজুকে ভাই পরিচয় দিয়ে তাকে মাদকাসক্তি থেকে বাঁচানোর কথা বলে নগদ টাকা, দামী ঘড়ি, স্বর্ণের আংটি নিয়েই সটকে পড়েন অনামিকা।
আনজু’র কাপড়-চোপড় ও মোটরসাইকেল অন্য ভাইয়ের এসে নিয়ে যাবে বলে যান। এরপর নিরাময় কেন্দ্রে ডোপ টেস্ট করা হলে মাদকাসক্তির নমুনা মেলেনি। বন্দী অবস্থায় থাকেন আনজু। এদিকে নগরীর সিও বাজারের বাড়ি থেকে বের হয়ে আনজু’র নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার স্ত্রী মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। বিষয়টি পিবিআইয়ের নজরে আসলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ৩ আগস্ট ওই মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র থেকে আনজুকে উদ্ধার করে পিবিআই। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর পিবিআই কার্যালয়ে সাবেক জেল কর্মকর্তাকে আটকিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার এ ঘটনা বিবরণ করেন পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, কথিত নারী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতারক অনামিকা সরকার ও অন্যান্য সদস্যরা ছদ্মবেশে নিত্য নতুন প্রতারণা করে মানুষকে ঠকিয়ে থাকে। এদের নামে বিভিন্ন থানায় মামলাও রয়েছে। এ মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃত অনামিকাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।